খাগড়াছড়ি প্রতিবেদক, হিলবিডিটোয়েন্টিফোর ডটকম
এক রাত একদিন থানায় আটক থাকার পর মঙ্গলবার সরকারী বিদ্যালয়ের ব্যাঞ্চসহ ট্রাকটি ছেড়ে দিয়েছে খাগড়াছড়ি সদর থানা পুলিশ।
জানা গেছে, সোমবার রাতে জেলার দিঘীনালা উপজেলা হতে দুটি ট্রাক সরকারী বিদ্যালয়ের ব্যাঞ্চ বোঝাই করে ছেড়ে এসে খাগড়াছড়ি পৌর বাসটার্মিনালে পৌছলে সদর থানার এ.এস. আই মো. শাহজাহান এর নেতৃত্বে পুলিশ ট্রাক নং-চট্টমেট্রো-১৪-০৮০০ আটক করে থানায় নিয়ে যায়। তবে মঙ্গলবার দুপুরে মালামালসহ ট্রাকটি ছেড়ে দেয়া হয়েছে। সরকারি সম্পদ উদ্ধারের প্রয়াসে পুলিশের আটকের পর আইনগত কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় বেঞ্চসহ ট্রাকটি ছেড়ে দেওয়ার পিছনে রহস্য থাকতে পারে বলে স্থানীয়দের অভিমত।
ট্রাকে মালামালের দায়িত্বে থাকা এক শ্রমিক জানান, ট্রাকে থাকা মালামালগুলো দিঘীনালা উপজেলা শিক্ষা অফিস কর্তৃক ৫টি জরাজীর্ণ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পুরনো নিলামের মালামাল এবং স্কুল ব্যাঞ্চগুলো গুলছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের। যা নিলামে ক্রয় করেছেন চট্টগ্রাম পাথরঘাটা কোতয়ালী এলাকার মো. শামীম আহাম্মদ ব্রাদার্স প্রতিষ্ঠান। তবে কোন মালামালের তালিকা প্রদর্শন করতে পারেননি। এসময় মুঠোফোনে নিলাম গ্রহীতা শামীম আহাম্মদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, নিলামে তিনি ঝরাজীর্ণ স্কুলের মালামাল ক্রয় করে পরিবহণ করছেন। তবে মালামালের তালিকায় স্কুল ব্যাঞ্চ রয়েছে কিনা তা তিনি জানাতে পারেননি।
এবিষয়ে, খাগড়াছড়ি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার রিটন বড়ুয়া বলেন, স্কুল ব্যাঞ্চ নিলাম দেওয়ার বিধি নাই। নিলামের নামে স্কুলের ব্যাঞ্চসহ ১টি ট্রাক খাগড়াছড়ি সদর থানায় আটক করা হয়েছে বলে আমি জানতে পেরেছি। সরকারি সম্পদ চুরি বা বিধির বহির্ভূত হলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে মৌখিক ভাবে তাগিদ প্রদান করেছেন বলে জানান। তবে দিঘীনালা উপজেলার ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা অফিসার ঝর্ণা চাকমা বলেন, নিলামের বিষয়ে আমি অবগত নই, আটক ট্রাক ও স্কুল ব্যাঞ্চ বিষয়ে গুলছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সূর্যোশ্বর ত্রিপুরাকে প্রশ্ন করতে পারেন।
এদিকে, নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক অনেকেই অভিযোগ করেন, গুলছড়ি স:প্রা:বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খাগড়াছড়ি জেলার সাংসদ কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরার নিকটতম আতœীয় হওয়ায় সাংসদ থানা অফিসারকে আটক ট্রাকটি ছেড়ে দেওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করেছেন। বিষয়টির সত্যতা যাচাইয়ে খাগড়াছড়ি থানার অফিসার ইনচার্জকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, এসব লেখার প্রয়োজন নাই, লেখেন যে, কাগজপত্র ঠিক থাকায় ট্রাকটি ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
অপরদিকে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, স্মারক নং-জেপ্রাশিঅ/খাগড়া/নিলাম/১১০৮/১৯, তাং-১২/১০/২০১৪মূলে দিঘীনালা উপজেলার ৭টি জরাজীর্ণ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মালামাল ১লক্ষ ৪১হাজার ২শ ৫৭টাকা দরধার্য্যে নিলাম আহবান করা হয়। এর মধ্যে দিঘীনালার ৫টিটি জরাঝীর্ণ স্কুলের মালামাল চট্ট্রগ্রামের শামীম আহাম্মদ ব্রাদার্স ক্রয় করেছেন। তবে মালামালের তালিকায় স্কুল ব্যাঞ্চ আছে কিনা তা উপজেলা প্রকৌশলী তথ্য দিতে পারবেন। তবে এ বিষয়ে যোগাযোগ করা দিঘীনালা উপজেলা প্রকৌশলী ওসমান গণির মুঠোফোন বন্ধ রয়েছে।
–হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.